নাটোরে বোরো চাষে আশায় বুক বেঁধে মেতে উঠেছে কৃষকরা। কয়েক বছর কৃষকরা বোরো ধানের ভাল দাম না পেলেও নতুন করে এখন বোরো ধানের চারা রোপন ও পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত কৃষক।একই সঙ্গে নতুন জাতের ধান আবাদে উৎসাহিত হয়ে উঠেছেন কৃষকরা। বালাইমুক্ত, উৎপাদন সময় কম, তাই খরচ সাশ্রয় এবং ফলন ভাল হওয়ার আশা নিয়ে নতুন জাতের বোরো ধান আবাদের জন্য জমি প্রস্তুত ও রোপণ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় কৃষকরা ইতোমধ্যে নতুন জাতের বীজ (ব্রি- ধান- ৫৮,৮১, ৮২,ও ৮৪ জাতের) রোপণ শুরুকরেছেন।
আবহাওয়া ভাল থাকলে এবং পরিবেশ ও প্রতিবেশ অনুকূলে থাকলে অন্যান্য জাতের তুলনায় একটু আগেই ফসল ঘরে তুলতে পারবেন এমন আশা করছেন দেশের বৃহত্তম চলনবিল ও হালতিবিলের কৃষকরা।
কৃষি বিভাগের দাবি এসব নতুন জাতের বোরো ধানের উৎপাদন আশানুরূপ হওয়ায় নতুন জাতের বীজের উৎপাদন ও বৃদ্ধি পাবে। এতে কৃষকরা ভাল ও গুণগত মানের বীজ সহজেই পেয়ে যাবে। কৃষকদের কারো জন্য অপেক্ষা বা ধর্ণা দিতে হবেনা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানা যায় যে, চলতি ২০১৯-২০ বোরো মৌসুমে ২ লাখ ১৮ হাজার ৫৭০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ৫৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।এ পর্যন্ত জেলার সাতটি উপজেলায় প্রায় ৯৪ ভাগ জমিতে বোরো ধান রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। তবে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছেন কৃষি বিভাগ। গত বছর ৬১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছিল।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার জানান, এবার জেলার বেশির ভাগ কৃষক নতুন জাতের ধান উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৮৮ হাজার ৮২৩ মেট্রিক টন। নতুন জাতের বীজ বিশেষ করে জিরাশাইলের বিপরীতে ব্রি ধান-৮১ জাত, ব্রি-২৮ ও ২৯ এর বিপরীতে ব্রি ধান-৫৮, ৮১ ও ৮৪ জাত, ব্রি ধান ২৯ এর পরিবর্তে ব্রি ধান-৫৮ জাত এবং স্বর্ণার বিপরীতে ব্রি -৮২ জাতের ধান আবাদ করছেন। কৃষকরা এরপরেও সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ধান বীজ রোপণ করছেন ব্রি ধান ২৮ ও ২৯ জাতের। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে বোরোর বীজ রোপণ শুরু হয়েছে চলবে মার্চ মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, অনেক জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। সরিষা তোলার পর কৃষকরা বোরো চাষ করবেন। সে কারণে বোরো আবাদ শেষ হতে সময় লাগবে। তিনি বলেন, কৃষকদের যথাযথ চেষ্টা এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফসলের বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে।